যোগসাজশে বোতলজাত পানির দাম বৃদ্ধির অভিযোগে ৭ কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা
Published :
Updated :
খরচ বৃদ্ধির অজুহাতে বোতলজাত পানির দাম বাড়িয়ে ভোক্তার পকেট কেটে কোটি টাকার মুনাফা লুটে নিচ্ছে দেশের নামিদামি কিছু প্রতিষ্ঠান। আধা লিটারের বোতলজাত পানির দাম বাড়িয়ে ৪২০ শতাংশ পর্যন্ত মুনাফা করছে এসব প্রতিষ্ঠান।
এ বিষয়ে অনুসন্ধান করে পর্যাপ্ত প্রমাণের ভিত্তিতে কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে মামলা করেছে সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন। এ সময় ঢাকা ওয়াসাসহ মোট ৮ কোম্পানির উৎপাদন খরচ অনুসন্ধান করে কমিশন। এর মধ্যে ওয়াসা ছাড়া বাকি ৭টি কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে।
মামলার বিষয়ে নিশ্চিত করে প্রতিযোগিতা কমিশনের এক সদস্য জানান, অনুসন্ধানে জানা যায় এসব নামিদামি প্রতিষ্ঠানগুলো যোগসাজশের মাধ্যমে খরচ বাড়ার অজুহাত দেখিয়ে ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে হঠাৎ করে আধা লিটার পানির বোতলের দাম ১৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০ টাকা নির্ধারণ করে। এই দাম বাড়ানোর কারণ হিসেবে প্রতিষ্ঠানগুলো জানায় ডলার ও কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমদানি খরচ বেড়েছে। তবে কোম্পানিগুলোর উৎপাদন খরচ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় উৎপাদন খরচ নামমাত্র বাড়লেও দাম বাড়ানোর ফলে একেকটি কোম্পানির মুনাফা বেড়েছে ৭১.২৩ শতাংশ থেকে ৪২০ শতাংশ পর্যন্ত।
তিনি আরও জানান, প্রতিষ্ঠানগুলো বিক্রেতাদের কাছে আধা লিটার পানির বোতল ১০ টাকায় দিচ্ছে আর বিক্রেতারা খুচরা বিক্রি করছেন ডাবল দাম ২০ টাকায়। এতে প্রতি বোতলে তাদের ১০ টাকা লাভ হচ্ছে। যেসব উৎপাদনকারী কম দামে বিক্রি করতে চাচ্ছে এদের কারণে তারা বাজারে টিকতে পারছে না। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে অকিজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ, কোকাকোলা, সিটি গ্রুপ, প্রাণ এবং পারটেক্স বেভারেজের মত প্রথম সারির ৭ কোম্পানি।
এদিকে অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, ঢাকা ওয়াসার শান্তি ব্র্যান্ডের পানির উৎপাদন খরচ না বাড়ায় তারা ডিস্ট্রিবিউটর ও খুচরা বিক্রেতাদের কমিশনও বাড়ায়নি। ১৫ টাকায় পানি বিক্রি করে লাভ কম হওয়ায় তাদের পানি খুচরা বিক্রেতারা দোকানে রাখতে চান না বলে জানা গেছে। ফলে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবসায় বড় ধরনের ধাক্কা খাচ্ছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন ওই সদস্য বলেন, প্রত্যেক পণ্যের একটি প্রতিযোগিতামূলক বাজার প্রয়োজন। বোতলজাত পানির ক্ষেত্রে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান মিলে যোগসাজশ করে দাম নির্ধারণ করে আইন পরিপন্থি কাজ করেছে। এজন্য তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর এ মামলার শুনানির তারিখ ধার্য করা হয়েছে।